প্রভাত রিপোর্ট : গত কয়েক মাসে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম। এমন পরিস্থিতিতে নতুন বাজেট নিয়ে আশায় ছিল সাধারণ মানুষ। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে দাম কমার বদলে বেড়েছে বেশ কিছু অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক ও কর। এমন সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও সংকুচিত করবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। গত ১৫ মাস ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। তাই এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ধান, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশকিছু পণ্য ও খাদ্যশস্য সরবরাহে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে নতুন বাধ্যবাধকতা আরোপে বাড়ছে করের চাপ।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির পরেও বাজেটে বাড়েনি করমুক্ত আয়সীমা। করহারেও কোনো ছাড় নেই। ব্যাংকে আমানত ১০ লাখ টাকার বেশি হলে বেড়েছে আবগারি শুল্ক। আইসক্রিম, জুস, পাশাপাশি অনেক গৃহস্থালি পণ্যেরও দাম বাড়ানো হয়েছে। বিনোদন সেবায় দ্বিগুণ হয়েছে ভ্যাট। এমনকি মোবাইল ফোন ব্যবহারেও বেড়েছে করহার। তাই এবারের বাজেটে বিপাকে সাধারণ মানুষ। বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী জানান, মধ্য মেয়াদে দেশের মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মানুষের আয় না বাড়লেও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যয় বাড়ায় মূল্যস্ফীতি কমার সুযোগ নেই।
গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘একদিকে হলো মূল্যস্ফীতি আর অন্যদিকে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা। ক্রয় ক্ষমতার ক্ষেত্রে আপনি যদি ব্যাপকভাবে পরোক্ষ কর আরোপ করেন, প্রত্যক্ষ কর না, তাহলে কিন্তু দুই তৃতীয়ংশ কর আসবে পরোক্ষ করে। অর্থাৎ ভ্যাট ও অন্যান্য জায়গা থেকে। তাহলে মানুষকে তার আয় নির্বিশেষে এই কর দিতে হবে। সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, গুরুত্বপুর্ণ সময়েও দেখা গেছে যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপরেও আমদানি কর কিন্তু ধার্য ছিল। সেগুলোর অ্যাডজাস্ট করার কিন্তু একটা সুযোগ ছিল, যেটা আমরা এখন দেখছি যে সেটার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এটা যদি আরও আগে নেওয়া হতে তাহলে এটার ফল কিন্তু আমরা আগেই পেতাম।’
বাজেট বক্তব্যে আগামীতে ব্যয় সংকোচন নীতি অবলম্বন করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে অর্থনীতির চলমান সংকট কিছুটা কমে আসবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।