শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

ঘরে-বাইরে দুঃসময়ে সাকিব আল হাসান

প্রকাশিত - ১৪ জুন, ২০২৪   ০২:১৮ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে একদিন আগেই র‌্যাংকিংয়ে বড় ধরনের পতন দেখেছেন সাকিব আল হাসান। এছাড়া দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে হারের পরদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাওয়ার আগে পারিবারিক ছবি তুলেছেন এই অভিযোগে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া একজন সংবাদকর্মীর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে দিলেও পরে সেটি ফেরতও পেয়েছেন। মাঠের বাইরে সাকিব এমনই। কিন্তু মাঠে তার পারফরম্যান্সটা ঠিকঠাক হচ্ছেনা। ব্যাট-বল কথা বললে আর কোন সমস্যা ছিলনা। সে কারণেই ঘরে বাইরে সব জায়গায়ই দুঃসময় পার করছেন সাবেক এই অধিনায়ক। তবে সাকিব জানেন কিভাবে ঘুরে দাড়াতে হয়। সেটা করার জন্য একটা ম্যাচই যথেষ্ট। যদিও পারফরম্যান্স বিবেচনায় সাকিব এখন দলের বোঝা কি না সেই প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। বছর চারেক আগে এক সাক্ষাৎকারে এই বাহাতি অলরাউন্ডার বলেছিলেন কখনো প্যাসেঞ্জার হয়ে থাকতে চান না। মূলত বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটে সবসময় ড্রাইভিং সিটে বসে থাকার কথা বলেছিলেন টাইগার এই অলরাউন্ডার। এমনকি সেই সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন যখন তার মনে হবে তিনি প্যাসেঞ্জার তখনই ছেড়ে দিবেন খেলা।

বর্তমানে বছর চারেক আগে বলা সাকিবের সেই কথা এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সবখানেই। কারণটা নিশ্চয় আলাদা করে বলার দরকার নেই। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপসহ বেশ কিছুদিন ধরেই ফর্মহীনতায় ভুগছেন সাকিব। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে নামলে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ অবস্থায় দেখা যাচ্ছে না এই অলরাউন্ডারকে। ২০ ম্যাচে সাকিবের ব্যাটে নাই একটা ফিফটিও। শেষ ২০ ম্যাচে গড় কেবল ১৮। বল হাতেও খুব একটা যে স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন, এমনটাও বলা চলে না। উইকেট পাননি। নিজের ওভারও পুরো করতে পারেননি। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে সাকিব খেলেছেন ২৮ টি-টোয়েন্টি ইনিংস। তাতে মাত্র ২৫.১৮ গড়ে নিয়েছেন ৫৫৪ রান। স্ট্রাইকরেট মাত্র ১২৩.৬৫। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ভূমিকায় থাকা সাকিবের কাছ থেকে যা বেশ অপ্রত্যাশিতই বটে। গত চার বছরে সাকিব ফিফটি পেয়েছেন মোটে ৩টি। একইসময়ে বল হাতেও ভুগতে হয়েছে সাকিবকে। ২৮ ইনিংসে বল করে পেয়েছেন ২৯ উইকেট। বোলার হিসেবে বারবার ব্রেকথ্রু এনে দেয়া সাকিবের নামের পাশে যা কিছুটা বেমানান। অফফর্মের সেই ধারা আছে চলমান বিশ্বকাপ দলেও।

চলতি বিশ্বকাপে দুই ম্যাচ খেলে সাকিব রান করেছেন ১১, পাননি কোনো উইকেট। যা সাকিবের নামের সাথে মোটেও মানানসই না। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে ভক্তদের মনে সাকিবের একাদশে থাকা নিয়েও। সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাট হাতে ব্যর্থ তিনি। ৪ রানের পরাজয়ে ভেঙেছে ভক্তদের মন। টানা ১৭ বছর দলের প্রয়োজনে পারফর্ম করে আসা সাকিবকে এখন বড্ড অচেনা মনে হয়। এই সাকিবই কি সেরা অলরাউন্ডার? অনেকে তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাকিবের অবসর চেয়ে বসেছেন! তবে দর্শকরা কি ভুলেই গেলের অতীতের কথা, অবশ্য কজনই বা মনে রাখেন অতীত। ১৭ বছর বাংলাদেশ দলকে টানা সাকিবকে কি ২-৫ ম্যাচ টানতে পারবে না, প্রশ্ন থেকেই যায়! তবে নিজের ফর্ম নিয়ে সাকিবের ভাবনা কি? তিনি নিজে কি উপলব্ধি করছেন সেটাই বড় বিষয়। বছরের পর বছর ড্রাইভিং সিটে থাকা সাকিব এখন প্যাসেঞ্জারের ভূমিকায়! বিসিবি কি ভাবছে সেটাও বলা প্রয়োজন।

এদিকে টাইগারদের সহকারী নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক খানিক আশাবাদী সাকিবকে নিয়ে বলেন, ‘কয়েকটা ম্যাচ খারাপ খেললেই সব শেষ হয়ে যায়ণা। দেখেন একট মন্তব্য করে দেওয়া সহজ। মুখ দিয়ে বের করে দিলে হয়ে যায় সেটা। একটা মানুষ ১৫ বছর ধরে এক নম্বরে আছে, সে একটা ম্যাচে সম্ভবত দুটার কোনোটা ক্লিক করেনি, আমরা হুট করে তার নামে একটা কথা বলে দিচ্ছি, আমি জানি না, আমি বলতে পারি না এটা। আমার কাছে এরকম মনে হয় না।’ ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে সাকিব খেলেছেন ২৮ টি-টোয়েন্টি ইনিংস। তাতে মাত্র ২৫.১৮ গড়ে নিয়েছেন ৫৫৪ রান। স্ট্রাইকরেট মাত্র ১২৩.৬৫। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ভূমিকায় থাকা সাকিবের কাছ থেকে যা বেশ অপ্রত্যাশিতই বটে। গত চার বছরে সাকিব ফিফটি পেয়েছেন মোটে ৩টি। রাজ্জাক বললেন সাকিবকে একটু সম্মান দেওয়ার কথা। অতীতে যতবার সাকিবকে নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা হয়েছে তার প্রত্যেকবারই ব্যাট-বল হাতে জবাব দিয়েছেন তিনি। যত সমালোচনা ঠিক ততটায় আগ্রাসী পারফর্মম্যান্স, তবে সাকিবের মধ্যে এবারের জড়তাটাই উঁকি দিচ্ছে বেশি। বয়স একটা সংখ্যা হলেও সেই ছাপ লুকানো আসলে কঠিন। বয়সের দিক থেকে ৩৭ অবস্থান তারকা এই ক্রিকেটারের।  সবমিলিয়ে সাকিবের এবারের ফিরে আসাটা বড় চ্যালেঞ্জেরও। জবাবটা তাই ব্যাট-বলেই দিতে হবে। অপেক্ষা সেই সময়ের।
প্রভাত/আসো

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন
ঢাকা টেস্ট