শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

বিএনপিতে তুষের আগুন 

প্রকাশিত - ৩০ জুন, ২০২৪   ১০:৩৭ পিএম
webnews24
নিজেস্ব প্রতিবেদক

প্রভাত রিপোর্ট : দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। কেন্দ্রীয়সহ তৃণমূল নেতাকর্মী হাজার হাজার মামলা-মোকদ্দমা মাথায় নিয়েই রাজনীতি করছেন। দল ছেড়ে কেউ যাননি। গত সংসদ নির্বাচনের সময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার ও কেন্দ্রীয় সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ছাড়া আর বড় কেউ দল ছাড়েননি। তবু ওয়ান-ইলেভেন রাজনৈতিক বিপর্যয় এখনও তাড়া করছে বিএনপি তথা জিয়া পরিবারকে। কখন দলের ভেতর ভাঙন ধরে, সে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন দলটির হাইকমান্ড। অবশ্য অতীত এবং ওয়ান-ইলেভেনের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে আগামী দিনের সংকট উত্তরণের চেষ্টা করছেন দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের এক দফা দাবির আন্দোলনের ব্যর্থতা নিয়ে দোষারোপের রাজনীতি চলছে বিএনপিতে। ব্যর্থতার দায় নিতে রাজি নন কেন্দ্রীয় ও মাঠ নেতার অনেকেই। 
তাদের মতে, আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক দফা দাবি আদায় করতে না পারলে দ্বিতীয় বিকল্প কী সে কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব দলের নীতিনির্ধারকের। তবে তারা সে দায় নিচ্ছে না; বরং আন্দোলনে ব্যর্থতার ধুয়া তুলে দলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ মহানগর ও অঙ্গ সংগঠন যুবদলের কমিটি গুটিয়ে নেয়া হয়েছে। কোনো কোনো নেতাকে পদোন্নতি ও পদাবনতি করা হচ্ছে। নিষ্ফল সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর এখন বিএনপির ঘরেই জ্বলছে তুষের আগুন। 
বিশ্বাস-অবিশ্বাস, অভিযোগ-অনুযোগ, রেষারেষি আর দ্বন্দ্ব-ফ্যাসাদেই বেশি সময় খরচ করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। বিশেষ করে সংসদ নির্বাচনের পর কারামুক্ত হওয়া কোনো কোনো নেতাকে সন্দেহ করছেন গ্রেপ্তার না হওয়া নেতারা। কারাগারে যাওয়া সেসব নেতার বিষয়ে দল ও শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছে ওই পক্ষটি। বিপরীতে সারাদেশে গণগ্রেপ্তার অভিযানের মধ্যেও জেলে না যাওয়া কোনো কোনো শীর্ষস্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে আঁতাত করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন কারাভোগকারী নেতারা। দলের একাধিক কেন্দ্রীয় ও নীতিনির্ধারক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 
এ পটভূমিতে দলের প্রভাবশালী দু’পক্ষের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখছে দলটির হাইকমান্ড। তবে কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে আনা গুরুতর অভিযোগের অকাট্য প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে দলটির দায়িত্বশীল কোনো কোনো নেতার দাবি, দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের সংসদ নির্বাচনের আগে এক দফা আন্দোলনে ভূমিকা, ব্যক্তিগত গতিবিধি ও বক্তব্য-বিবৃতিকে মূল্যায়ন করছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সে মূল্যায়নের ভিত্তিতেই দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় নেতাদের পদোন্নতি ও পদাবনতি দেয়া হচ্ছে। 
অবশ্য পদপদবি হারানোর ভয়ে কেউ সর্বসমক্ষে কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করে বিএনপি নেতাদের দাবি, যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে বিরোধী দলের বিকল্প কৌশল থাকে। তবে বিএনপির বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিকল্প কোনো পথ না রাখা রাজনৈতিক কৌশলে বড় ভুল ছিল, যা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিদেশি কূটনীতিকরাও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ পরিস্থিতিতে অনেকে জাতীয় ও দলীয় রাজনীতি নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। হতাশায় ডুবে আছেন অনেকে। কেউ কেউ রাজনীতির মাঠ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে ব্যক্তিগত ব্যবসা-বাণিজ্য ও পারিবারিক কাজে সময় দিচ্ছেন।  
এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, বড় রাজনৈতিক দলের ভেতর পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ সব সময় ছিল, এখনও আছে। কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন। যারা দলে গুরুত্বপূর্ণ পদপদবি পান না, তারাও ক্ষোভ থেকে কিছু কথাবার্তা বলবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে আবার কিছুদিন পর তা ঠিক হয়ে যায়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকে যথাযথ মূল্যায়ন করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক গুজব ছড়ানো হয়, যা সত্য নয়।

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন
তারেক রহমান
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী মারা