প্রভাত সংবাদদাতা, দিনাজপুর : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য অর্ধেকে নেমেছে। আগে পণ্যবাহী আড়াই শতাধিক ট্রাক ঢুকলেও বর্তমানে তা ৩০টিতে নেমেছে। ডলার সংকটসহ নানা জটিলতায় আমদানি কমেছে বলে দাবি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের। আমদানি কমায় দুশ্চিন্তায় আছেন শ্রমিকরা। আয় কমায় বন্দরের ব্যয়ভার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের মোট চাহিদার বেশিরভাগ পণ্য আমদানি হয় এই বন্দর দিয়ে। প্রতিদিন চাল-ডাল, পেঁয়াজ, খৈল, ভুসি, ভুট্টা ও পাথরসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী আড়াই শতাধিক ট্রাক ঢুকতো। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকতো বন্দর। কিন্তু দিন দিন স্থবিরতা নেমে এসেছে। আমদানি কমায় আয় কমেছে শ্রমিকদের। এতে বিপাকে পড়েছেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও কর্মীরা। ইতোমধ্যে বন্দরের ৩৭ কর্মচারীকে ছুটিতে পাঠিয়ে ব্যয় কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২ লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। সেখানে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের গত ১১ মাসে ছয় লাখ ২৫ হাজার টন পণ্য আমদানি হয়েছে।
দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে বন্দরের শ্রমিক রেজাউল ইসলাম বলেন, আগে আমদানি-রফতানি বেশি হওয়ায় আমাদের আয় বেশি হতো। বর্তমানে কমে যাওয়ায় আমাদের কাজ নেই বললেই চলে। এমনও দিন যাচ্ছে কোনও কাজ পাচ্ছি না। এতে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সারাদিনে ২০-২৫টি পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকছে। যেখানে শ্রমিক আছে তিন শতাধিক। যার কারণে সবার অবস্থা খারাপ। দিন শেষে ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে জুটছে ভাগে। কোনোদিন সেটিও হচ্ছে না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি আমরা।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অফিসের কর্মচারী কাঞ্চন পাঠান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের অফিসের কর্মচারী নয় জন। আগে প্রতিদিন ৩০-৪০টি ট্রাকের পণ্য খালাস করতে পারতাম। তাতে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে অফিসের লাভ হতো। এখন সব মিলিয়ে বন্দরে ট্রাক ঢুকছে ২৫-৩০টি। এতে অফিসের আয় তো দূরের কথা কর্মচারীদের বেতন দিতেই হিমশিম খাওয়া লাগছে।