প্রভাত সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া : ধানের জাত ঠিকমতো চেনেন না কুষ্টিয়ার খাজানগরের চালকল মালিকরা (মিলার)। এজন্য ধানের জাত ও জাতের নমুনা চেয়ে কুষ্টিয়া কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে কুষ্টিয়ার অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। রবিবার কুষ্টিয়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার দপ্তরে এ চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি ওমর ফারুক উল্লেখ করেন, চালের বস্তার গায়ে ধানের জাত লিখতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রাইস মিল (চালকল) মালিকদের। এজন্য সরকারের তালিকাভুক্ত ধানের জাতের নাম ও নমুনা সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ওমর ফারুক জানান, সরকার বলছে, মিনিকেট বলে কোনো ধান নেই। কিন্তু আমরা এ নামে ধান কিনছি কৃষকদের কাছ থেকে। তাহলে ওই ধানের ক্ষেত্রে বস্তায় কি লিখব, তা জানার জন্যই এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, অন্য জাতের ধান থেকে মিনিকেট নামে চাল বাজারজাত করে লাভবান হন মিল মালিকরা। তাই তারা এসব চিঠি দিচ্ছেন। চিঠিটি ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা এলে, তা বাস্তবায়ন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা জানান, সরকার অনুমোদিত জাতের ধান ছাড়া অন্য নামে যেমন মিনিকেট নামে চাল বাজারজাত করার সুযোগ নেই। করতে দেওয়া হবে না।
কুষ্টিয়ার খাজানগরে ৫০টির মতো অটোমেটিক রাইস মিল থেকে সারাদেশের সরু চালের সিংহভাগ সরবরাহ করা হয়। ধানের জাত যেটাই হোক, এখান থেকে মিনিকেট নামের চালই বেশি সরবরাহ হয়ে থাকে। মিনিকেট চালের চাহিদা বেশি থাকায় বাজার চড়ে যায়। এ কারণেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিপত্র জারি করেছে যে চালের বস্তার গায়ে ধানের জাতের নাম ও চালের দাম লিখে দিতে হবে। আড়াই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ মিল মালিক বস্তার গায়ে এসব তথ্য লিখছেন না।
অপরদিকে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুষ্টিয়ার বেশিরভাগ কৃষকই তাদের ধানের জাতের নাম উল্লেখ করেই বিক্রি করেন। এছাড়া কৃষি বিভাগও ধানের জাত উল্লেখ করেই বীজ বিতরণ ও প্রণোদনা দিয়ে থাকে। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী উৎপাদিত ধানের জাত উল্লেখ থাকে। তবে মিলাররা এসব ধানকে সরু করে মিনিকেট বলে বিক্রি করেন। জাত উল্লেখ করে বিক্রি করলে মিলারদের মিনিকেটের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তারা এমনটা করছেন। এছাড়া অদৃশ্য কারণেই কুষ্টিয়ার চালকল মালিকরা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দিনের পর দিন মিনিকেট নামে চাল বাজারজাত করে আসছেন। এর মধ্যে জাত না চেনার এ চিঠি তথ্য গোপন করে মিনিকেট বাজারজাত ও সরকারি নির্দেশনা অমান্যের জন্য কালক্ষেপণ মাত্র- এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।