বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

হিমায়িত মাংস আমদানির অনুমতি খামারি শিল্পের ধ্বংস ডেকে আনবে 

প্রকাশিত - ০৩ জুলাই, ২০২৪   ১০:০৮ পিএম
webnews24
নিজেস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিনিধি : হিমায়িত হালাল গরুর মাংস আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি এ ব্যাপারে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এখন তা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পরই তা কার্যকর হবে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাংসের বাজারে অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে। ভোক্তা সাধারণকে স্বস্তি দিতে হিমায়িত হালাল মাংস আমদানির চিন্তা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে হিমায়িত মাংস আমদানি, সংরক্ষণ ও বিতরণ নীতিমালা করা হচ্ছে। এর আওতায় ভারত, ব্রাজিল, নেপাল থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি করা হবে।
জানা যায়, ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরকালে হিমায়িত হালাল গরুর মাংস রফতানির প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে মাংস অপেক্ষাকৃত কম দামে রফতানির কথা বলেন। বাংলাদেশ থেকে জীবিত গবাদিপশু রফতানির উপরও গুরুত্ব দেয়া হয়। জাহাজে পরিবহন দীর্ঘ সময় ও ব্যয়বহুল হবে বলে জীবিত গরু আমদানির কথা এ পর্যায়ে বিবেচনা করা হচ্ছে না। জীবিত গবাদি পশু আমদানির অনুমতি দেয়া হলে নিকট প্রতিবেশী ভারত থেকে অবাধে গরু মহিষ আমদানি করে, চোরাই পথে আনা ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হওয়ার এবং এতে করে দেশের খামারি শিল্প ও কৃষকদের মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথাও সংশ্লিষ্টদের ভাবতে হচ্ছে।
অপরদিকে বাংলাদেশের খামারিরা হিমায়িত মাংস আমদানিরও প্রবল বিরোধী। তাতে তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেই তাদের আশঙ্কা। দেশে কয়েক লাখ খামারি গড়ে তুলেছে। অনেক শিক্ষিত যুবক এই মিল্পে জড়িয়েছে। ব্যাপক সংখ্যায় খামার গড়ে উঠায় দেশে প্রায় আড়াই কোটি গবাদি পশু রয়েছে। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী এক কোটি ৩০ লাখ কোরবানির চাহিদা মিটানোর মতো গবাদি পশু দেশেই রয়েছে। খামারিরা প্রশ্ন তুলেছেন তাহলে জীবিত বা হিমায়িত মাংস আমদানি করা হচ্ছে না কেন। তারা পশুখাদ্য ও পশুর বিভিন্ন ওষুধের দাম কমানোর দাবি করেছেন। তারা মনে করেন বাজারে মাংসের দাম বৃদ্ধির এটাই কারণ। ঢাকা মহানগর ও অন্যান্য মহানগরসহ দেশজুড়েই গরু ও খাসির মাংসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০-৮৫০ টাকার খাসির মাংস সাড়ে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আদালত থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি, সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থা নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করেন।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ভারত, পাকিস্তান, ব্রাজিল থেকে হিমায়িত হালাল গরুর মাংস রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। হিমায়িত মাংস আমদানির অনুমতি দেয়া হলে তা দেশে ব্যাপকভাবে গড়ে ওঠা খামার ও কৃষকের অস্তিত্বের জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি হয়ে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

প্রভাত/টুর

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন