প্রভাত রিপোর্ট : নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়ার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কয়েক বছর নানা টানাপড়েনের পর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিতে আইন করে সরকার। ২০২৩ সালে করা আইনের বৈধতা বলে পুরো বিভাগটি স্থানান্তরে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জনবলের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। গত ৪ জুন সুরক্ষা বিভাগ থেকে ইসি সচিবের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে ইসির পক্ষ থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগকে তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। ইসি সচিব বরাবর পাঠানো সুরক্ষা বিভাগের উপসচিব আবেদা আফসারী স্বাক্ষরিত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের লক্ষ্যে হালনাগাদ তথ্য প্রদানসংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পরিচয়ন নিবন্ধন আইন, ২০২৩ অনুসারে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগের অনুকূলে দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ বিভাগের অ্যালোকেশন অব বিজনেস এমোং দ্য ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশন’ও সংশোধন হয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য মোতাবেক এই অনুবিভাগে অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ৭১ জন। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার নিমিত্তে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের হালনাগাদ তথ্য জানা আবশ্যক। এনআইডি অনুবিভাগের সর্বশেষ অনুমোদিত জনবলের তথ্য সাংগঠনিক কাঠামোসহ পদের নাম ও সংখ্যা, নিজস্ব জনবল, প্রেষণ ও আউটসোর্সিংয়ে নিয়ে জনবলের তথ্য জানাতে বলা হয় ঐ চিঠিতে। সুরক্ষা বিভাগের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে জনবলের সর্বশেষ তথ্য ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
২০২১ সালের ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এনআইডি সরিয়ে নেওয়ার জন্য মতামত দেয়া হলে ২৪ মে ইসিকে এনআইডি ছেড়ে দেয়ার কার্যক্রম হাতে নিতে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরপর নির্বাচন কমিশন যুক্তি তুলে ধরে এনআইডি নিজেদের কাছে রাখার পক্ষে মতামত তুলে ধরে চিঠি দেয়। পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২০ জুন ইসিকে একটি চিঠি দেয়। এতে বলা হয়, সরকার এনআইডি কার্যক্রম আইনানুগভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তাই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সেই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে একই বছর ২৩ জুন তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা গণমাধ্যমকে বলেন, এনআইডি অনুবিভাগ অনেক বড় প্রতিষ্ঠান। কীভাবে নেবে না-নেবে, এ বিষয়ে অবশ্যই আলোচনা হবে। এটা তো টেবিল চেয়ার নয় যে, উঠিয়ে নিয়ে গেলাম। এনআইডি সেবা চলে গেলে আমাদের কার্যক্রমে অসুবিধা হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিতে সরকার ইতিমধ্যে আইন করেছে। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে এনআইডি নেয়ার জন্য জনবল-কাঠামো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ইসির আদলে মাঠপর্যায়ে জনবল-কাঠামো কীভাবে গড়ে তোলা যায়, সেই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে উপজেলা পর্যায়ে নিবন্ধক কার্যালয় আওতায় নিয়ে এনআইডি কার্যক্রম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ আগামী এক বছরের মধ্যে এনআইডি চলে যাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রভাত/টুর