প্রভাত প্রতিবেদক : বাংলাদেশে আমদানি নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরুর সন্ধানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় সাদেক অ্যাগ্রোর খামারে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় ছয়টি ব্রাহমা জাতের গরু জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে খামারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, জব্দ করা ছয়টি গরু প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ব্রাহমা জাতের গরুর মাংস বেশি হয়। জাতটির উৎপত্তি ভারতে। পরে যুক্তরাষ্ট্রে আরও দুই থেকে তিনটি জাতের সংমিশ্রণে এটিকে উন্নত করা হয়। দুই থেকে আড়াই বছরের দেশি গরুর ওজন যেখানে ২৫০ থেকে ৩৫০ কেজি হয়, সেখানে ব্রাহমা জাতের গরুর ওজন হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার কেজি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, ব্রাহমা গরু বাংলাদেশে পালনের অনুমতি দেয়া হলে দুধ বেশি দেয়া গরুর পালন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই, ব্রাহমা জাতের গরু বাংলাদেশে আমদানি নিষিদ্ধ।
অভিযোগ আছে, সাদেক অ্যাগ্রো সরকারি আদেশ অমান্য করে রাতারাতি লাভের আশায় ব্রাহমা গরু আমদানি করে। ২০২১ সালের ৫ জুলাই তাদের আমদানি করা ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দ করে ঢাকা কাস্টম হাউস। পরে সেগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হেফাজতে সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে রাখা হয়। সাদেক অ্যাগ্রো এসব গরু জব্দের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করলে উচ্চ আদালতের রায় তাদের বিপক্ষে যায়।
গত রমজানের আগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কৌশলে ১৫টি গরু সাদেক অ্যাগ্রোকে দিয়ে দেয়। তার মধ্যে তিনটি মারা যায়। বাকি গরু কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য খামারে রাখে সাদেক অ্যাগ্রো।
সাদেক অ্যাগ্রো এবার ঈদুল আজহায় ব্রাহমা গরুগুলো চড়া দামে বিক্রি করলে আলোচনার ঝড় উঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়। এতে টনক নড়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের।
দুদকের টিম ১ জুলাই নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরুর সন্ধানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খামার ও সাদেক অ্যাগ্রোতে অভিযান চালায়। কিন্তু, অভিযানের বিষয়ে দুদক থেকে তেমন কিছু জানানো হয়নি। বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাদেক অ্যাগ্রোতে আবারও অভিযান চালায় দুদকের টিম। সাদেক অ্যাগ্রোতে ছয়টি ব্রাহমা গরুর সন্ধান পাওয়া গেলেও অভিযানের সময় খামারের মালিক ও ব্যবস্থাপককে পাওয়া যায়নি।
প্রভাত/এআর