রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১
Proval Logo

বিশ্বকাপের জন্য কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ

প্রকাশিত - ২৮ মে, ২০২৪   ১২:৪২ এএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সাথে এখনো নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছেনা বাংলাদেশ। অনেক ছোট দলের কাছেও হারতে হয়েছে লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের। দরজায় কড়া নাড়া কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এখনও শেখার পর্যায়ে আছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। বিশ্বসেরা আসর শুরুর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলে। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হার দিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেদের সামিল করেছে দল। সে হিসেবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে বিশ্বকাপের জন্য কতটা প্রস্তুত হয়েছে বাংলাদেশ। যদি বলা হয় স্বস্তি, চিন্তা আর স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপে খেলার অপেক্ষায় রয়েছেনদল। একেতো আইসিসির সহযোগী দেশ তার উপর র‌্যাংঙ্কিংয়ের ১৯ নাম্বার দল। তাদের কাছে পরপর দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ খোয়ানো এক কথায় লজ্জার, হতাশার আর ভীষণ চিন্তার। অবশেষে সিরিজের শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শান্তরা। শনিবার টেক্সাসে যুক্তরাষ্ট্র টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে করে ১০৪ রান। জবাব দিতে নেমে দুই ওপেনার দলকে ১০ উইকেটের জয় উপহার দেয়। অথচ প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেট ও দ্বিতীয়টিতে ৬ রানে হেরেছিল টাইগাররা। বলার অপেক্ষা রাখে না দাপুটে জয় ও ওপেনারদের রানে ফেরা দলকে এনে দিয়েছে স্বস্তি। তবে ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা মুক্ত হওয়া যায়নি।

তানজিদ হাসান তামিম তার ফর্ম ধরে রেখেছেন। সিরিজের শেষ ম্যাচে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন এ তরুণ ওপেনার। এদিন সৌম্য সরকারের ৪৩ রান দলকে কিছুটা হলেও ভরসা দিয়েছে। তবে লিটন কুমার দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত’র ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপের আরো কাছে এখন বাংলাদেশ। ৭ই জুন আসরের মূল পর্বে ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে শান্তর দল। তার আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল। দলের অন্যতম সদস্য তাওহীদ হৃদয় শুনিয়েছেন তাদের স্বপ্নের কথা। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আইসিসির ইভেন্ট জেতাটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যখন আমরা জিতবো তখন আমাদের ওইভাবেই মূল্যায়ন করবে সবাই। যেটা এখন হয়ত অস্ট্রেলিয়া বা বড় বড় প্লেয়ারদের করে। যখন আমরা ২-১টা ট্রফি জিতব, তখন আমাদের মানসিক স্বস্তি, আত্মবিশ্বাস এবং পরবর্তী প্রজন্ম যারা আসবে তারাও ওইভাবে সবার মধ্যে তৈরি হবে (আত্মবিশ্বাস)।’

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামতে এখনো দুই সপ্তাহর কম সময় বাকি। তার আগে অবশ্য টাইগারদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে। গেল শুক্রবার আইসিসি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি ঘোষণা করেছে।  সূচি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ২৮শে মে টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর বিশ্বকাপের মূল আসর শুরুর একদিন আগে অর্থাৎ ১লা জুন ভারতের বিপক্ষে নিউ ইয়র্কে খেলবে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর যে ঘাটতি আছে দলের তা পূরণ করে নেয়ার জন্য এই প্রস্তুতি ম্যাচ দুটি টাইগারদের জন্য বড় সুযোগ। বাংলাদেশ দল কবে বিশ্বকাপ জিতবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। কিন্তু যে পারফরম্যান্স তা প্রত্যেক বিশ্বকাপেই  ভক্তদের ভীষণ ভাবে হতাশ করে। তবে হৃদয় জানিয়েছেন কঠিন পরিশ্রম করতে পারলে একদিন বিশ্বকাপও ঘরে তুলতে পারবে তারা। জাতীয় দলের হয়ে ধারাবাহিক ভাবে পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন তাওহীদ হৃদয়। ব্যাট হাতে দলের অন্যতম ভরসাও হয়ে আছেন এই তরুণ। হৃদয়ের জন্য অবশ্য এটিই প্রথম বিশ্বকাপ নয়।

গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে ১৬৪ রান করেন তিনি। এমন পারফরম্যান্সে হতাশ নিজেও। এর কারণও অবশ্য ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। এবার দলের চাওয়া অনুযায়ী খেলার জন্য তৈরি বলেও জানিয়েছেন হৃদয়। তবে এবারও দল যেখানে তার প্রয়োজন মনে করবেন সেখানেই ব্যাট করতে চান হৃদয়। গুটিকয়েক ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের মাঝে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে র‍্যাঙ্কিংয়ের ব্যবধান ১০। সংখ্যাটা ছোট হলেও শক্তিমত্তার বিচারে পার্থক্যের ব্যবধান আকাশ-পাতাল। শক্তিমত্তায় যোজন যোজন এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ নিজেদের করে নিবে সিরিজ, এমন আশায় বুক বেঁধে ছিলেন দেশের ক্রিকেট সমর্থকরা। হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রত্যাশার সেই প্রতিচ্ছবির দেখা মেলেনি। বরং প্রতিটি বিভাগে ছিল স্বাগতিক মার্কিনিদের দাপট। ইতোমধ্যে টানা দুই ম্যাচ জিতে নিশ্চিত করেছে সিরিজ জয়। বাংলাদেশকে টানা দুই ম্যাচে হারিয়ে প্রথমবার টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিপক্ষে তারা পেয়েছে সিরিজ জয়ের স্বাদ। বিশ্বকাপের আগে সিরিজ হারের চেয়ে বেশি দুশ্চিন্তার হতে পারে ক্রিকেটারদের বাজে পারফরম্যান্স। ওপেনিংয়ে লিটন দাস নেই ফর্মে। রান করাটা যেন ভুলেই গেছেন এই ডানহাতি। বাকি দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও সৌম্য সরকারও দিতে পারছেন না আস্থার প্রতিদান। বিশ্বকাপের বিমান ধরার আগে ধারাবাহিকভাবে রান করেননি। অধিনায়ক শান্তও পারছেন না রান করতে। অধিনায়কত্বের চাপে রান করতেই যেন ভুলে গেছেন। টপ অর্ডারের এই ব্যর্থতা নিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া টাইগারদের নুইয়ে পড়া সময়ের ব্যাপারমাত্র। মিডল অর্ডারও ঠিকঠাক কার্যকরী হতে পারছে না প্রতি ম্যাচে।
প্রভাত/আসো

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন