বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Proval Logo

সড়ক থেকে উঠে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত - ১৪ আগস্ট, ২০২৪   ০৭:৩৮ পিএম
webnews24

বিশেষ প্রতিনিধি : সড়ক থেকে উঠতে শুরু করেছে আন্দোলনকারী ছাত্ররা। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশরা কাজে যোগদান করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে ক্লাসে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালগুলোতে পড়াশুনা করা ছাত্র-ছাত্রীরা চাইলে রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। গত এক সপ্তাহের তুলনায় গতকাল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ছিলো খুবই কম। বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, মগবাজার, মৎসভবন, মালিবাগ, বিজয়স্মরণি কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা গেলো রাস্তায় যেমন অল্প সংখ্যক পুলিশ কাজ করছে তেমনি শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিলো কম। 
তবে ঢাকার রাস্তায় পুরোদমে ট্রাফিক সদস্যদের কাজ করতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানালেন দায়িত্বে থাকা কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ। আর তারা দায়িত্ব নেয়ার পরপরই রাস্তায় যানবাহনের চাপও বাড়তে শুরু করে। কয়েকটি জায়গায় দীর্ঘ গাড়ির লাইন দেখা যায়। কয়েকটি জায়গায় ছিলো জ্যাম শুন্য। যেকোন যানজট থেকে বের হয়ে গাড়িগুলোকে পড়তে হয় সিগন্যালের বিরম্বনায়। এখনো রাস্তায় স্বেচ্ছাসেবীরা রয়েছেন, আছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কিছু শিক্ষার্থী। তবে এই কাজ তারাও সীমিত করে ফেলেছেন বলে জানালেন রেড ক্রিসেন্টের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে হাজারের উপর শিক্ষার্থী কাজ করেছেন। এদের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ছিলেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের শিক্ষার্থীরা অন্যতম। আছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, নুর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজসহ প্রায় সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, ‘সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করছি। ট্রাফিক রুলস, ফুটপাথ ব্যবহার মানুষকে বোঝাতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অনেকেই বিষয়গুলো ভালোভাবে নিচ্ছেন, আবার অনেকে খারাপ ব্যবহারও করেছে। মানুষ যে যার মতো করে আমাদের পানি ও শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করছে, আবার আমরা নিজেরাও নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। এটি একটি সম্মিলিত প্রয়াস।’ 
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী আহনাফ উদ্দিন বলেন, ‘গত মঙ্গলবার থেকে রামপুরা বনশ্রী, হাতিরঝিল, মধ্য বাড্ডা, আফতাবনগর এলাকায় আমরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করেছি ট্রাফিকের বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে। সবার কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি।’ তবে শিক্ষার্থীদের এমন কর্মকান্ডে ভাটা পড়তে যাচ্ছে বলে কিছুটা হতাশ তারা। কারণ, ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে নিলে সড়কে তারা বেশিদিন থাকতে পারবেন না। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সড়কে কাজ করতে বলেছেন। সেই হিসেবে সড়কে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি তেমন ছিলো না বললেই চলে। 
শিক্ষার্থীদের এ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজটি কতদিন চলবে জানতে চাইলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানালেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হলে আর রাস্তায় থাকবেন না বলে জানান তারা। ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব নিলে হয়তো আর দু-একদিন রাস্তায় থাকতে হবে। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবেন শিক্ষার্থীরা। দেশের প্রয়োজনে যেকোনো সময়ে রাজপথে নেমে আসতে চান তরুণরা। স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা উঠে যাওয়ায় ঢাকাসহ সারাদেশে স্বাভাবিক হতে চলেছে রাস্তার কার্যক্রম। কিছু কিছু জায়গায় রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করছেন, এবং সময়উপযোগি করে সিগন্যাল ছাড়ছেন, এতে যানজটে আটকা পড়া যাত্রীরাও খুশি হচ্ছেন। যদিও এখনো সারাদেশে সব ট্রাফিক পুলিশ যোগ দেননি। কয়েকদিনের মধ্যে কর্মস্থলে সবাই যোগ দিলে হয়তো রাস্তার যানজটও কমতে শুরু করবে বলে মনে করেন সাধারণ জনগন। 


 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন
সংবাদ সম্মেলনে অসত্য তথ্য পরিবেশনের তীব্র প্রতিবাদ
সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা