প্রভাত রিপোর্ট : উচ্চাভিলাসী বাজেট বাস্তবায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন শুল্ক, করারোপের পাশাপাশি ও বিদ্যমানহারেও আরী বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এখন অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছে। এতে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার দেখো দিয়েছে । যার ফলে সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রত্যাশিত বিনিয়োগ আসছে না। জানা যায়, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর শিল্পকারখানা স্থাপনে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক সুবিধা পেতেন। বিদেশি কর্মীরা আয়করমুক্ত ছিলেন। উদ্যোক্তারা আরো কিছু সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন। কিন্তু বিগত সরকার চলতি অর্থবছরে এসব সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। শুল্ক ফি করারোপের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থের সংস্থান করে বাজেট ঘাটতি পূরণের জন্যই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নেয়। এতে করে সরকারি-বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো থেকে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ভাটা পড়েছে। এত করে নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ হাতছাড়া বা প্রলম্বিত হচ্ছে।
জানা যায়, উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও ওয়্যারহাউজিং বন্ড সুবিধা প্রত্যাহার, ডেভেলপারদের আয়ের উপর আয়কর আরোপের জন্যও প্রত্যাশিত বিনিয়োগ আসছে না। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলে গত জুন পর্যন্ত বিনিয়োগ হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এটি পর্যাপ্ত নয়। এই সময়ে দেড় লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগপ্রত্যাশিত ছিল। শিল্পকারখানার প্রসার, কর্মসংস্থান ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ইপিজেডে বেশকিছু সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।বিনিয়োগকারীদের ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেয়া মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক অব্যাহতিসহ ৮ ধরনের সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। উদ্দেশদেশি-বিদেশিবিনিয়োগকারীদের উৎসাহী করা এবং ইপিজেডে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের প্রদত্ত সুবিধা একতরফাভাবে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। দেশি-বিদেশি প্রায় শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান উদ্যোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অর্ধশতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান এরইমধ্যে বিনিয়োগ শঙ্কা, অনিশ্চয়তায় পড়েছে। তারা এবং বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব করে নেয়ার সমালোচনা করে এসব সুবিধা পুনর্বহালের জোর দাবি জানিয়েছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তারা বৃহত্তর এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সৃষ্ট আস্থাহীনতা দূর করার কথা বলেছেন। কিন্তু প্রতিকারে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে এইসব সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয় হয়েছে। অথচ গত অর্থবছরেও এসব সুবিধা ছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রয়োজনীয় ছাড় ছাড় না দিলে বাজেট ঘাটতি আরও দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।