বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১
Proval Logo

ভারত শান্তির সেতু হতে চায় : মোদী

প্রকাশিত - ২৩ আগস্ট, ২০২৪   ০৮:৩৩ পিএম
webnews24

প্রভাত ডেস্ক  : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইউক্রেনে পৌঁছেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে শুক্রবার সাক্ষাৎ করেন তিনি। মোদী এই সফরকে ঘিরে শান্তি প্রতিষ্ঠারই বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, ভারত হতে চায় শান্তির সেতু। কোনও পক্ষ তারা নিতে চায় না। ১৯৯১ সালের পর এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন সফর করছেন। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ থেকে ‘রেল ফোর্স ওয়ান’-এ চড়ে শুক্রবার ইউক্রেনে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতেই সেখানে মোদীর এই সফর। সেখানে তিনি ৭ ঘন্টা অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় পত্রিকাগুলো। জেলেনস্কির সঙ্গে অবশ্য এর আগে একাধিকবার মোদীর কথা হয়েছে। কিন্তু এবার কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ভারসাম্যের বার্তা দিতেই মোদী ইউক্রেনে গেলেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, গত ৮ জুলাই রাশিয়া সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন মোদী। তাই এবার ভারসাম্য বজায় রাখতে রাশিয়ার শত্রুদেশ ইউক্রেনে তিনি পা রাখলেন। যদিও সমালোচকরা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলোকে সন্তুষ্ট রাখতেই তার এই সফর।
মোদী এক্স বার্তায় জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে তিনি কিইভে পৌঁছেছেন। তার সফরকে স্বাগত জানিয়ে জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়রমাক বলেছেন, মোদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় থেকে বলা হয়েছে, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নেবে না ভারত। তবে শান্তি ফেরাতে দুই দেশের বার্তার সমন্বয় করার দায়িত্ব নিতে নয়াদিল্লি রাজি। তাই মোদীর কিইভ সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি শান্তি প্রক্রিয়া নিয়েও জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক বলেন, মোদীর কিইভ সফর গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রাশিয়ার ওপর ভারতের কিছুটা প্রভাব রয়েছে। মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক থাকা ভারত প্রকাশ্যে যুদ্ধে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর সমালোচনা করেছে। তবে আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নের পরও ভারত মস্কোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করেছে। এদিকে ইউক্রেন তার শান্তির ধারণা প্রচার এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এ বছরের শেষের দিকে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন করার পরিকল্পনা করেছে। 
গত জুনে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কিন্তু ভারত থেকে প্রতিনিধি ছিল। তবে সম্মেলনে অংশ নেয়নি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, স্থায়ী শান্তি কেবল তখনই অর্জন করা যেতে পারে, যা উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, এবং এটি কেবল আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদারের জন্য মোদীর সফর গুরুত্বপূর্ণ। তবে কিইভ এর বিশ্লেষক ভলোদিমির ফেসেঙ্কো মোদীর সফর থেকে শান্তি প্রক্রিয়ায় বড় কোনও অগ্রগতি আশা করছেন না। তিনি বলেন, সামরিক পরিস্থিতি শান্ত হলে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরই কেবল আলোচনা শুরু হতে পারে।ফেসেঙ্কো আরও উল্লেখ করেন, মোদীর এ সফর ভারতের পক্ষে এটি প্রমাণ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, তারা কেবল রাশিয়াকে সমর্থন করছে না। আর মোদীর মস্কো সফরের পর ভারত কিইভ এর সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নত করতে চায়।
 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন