প্রভাত স্পোর্টস: সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তাকিয়ে ছিলেন বার্সেলোনার খেলোয়াড় থেকে সমর্থকেরা। ১১ মিনিটে সেন্টারব্যাক মার্তিন ভালিয়েন্তের গোলে মায়োর্কা এগিয়ে যাওয়ার পর নিশ্চয়ই আনন্দে মেতেছিল কাতালান শিবির। ১–০ গোলে পিছিয়ে রিয়াল প্রথমার্ধ শেষ করার পর তাঁরা হয়তো লিগ জয়ের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু বেরসিক রিয়াল মাদ্রিদ তা হতে দেয়নি। বিরতির পর ম্যাচের ৬৮ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও যোগ করা সময়ে (৯৫ মিনিট) ২০ বছর বয়সী ডিফেন্ডার ইয়াকোবো রামনের গোলে শেষ পর্যন্ত ২–১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল। ফলে লা লিগা শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে উঠতে বার্সাকে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।
বুধবার রাতে মায়োর্কার কাছে রিয়াল হারলেই লিগ জয় নিশ্চিত হতো হান্সি ফ্লিকের দলের। কিন্তু ড্র করতে করতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা জয় তুলে নেওয়ায় বার্সার জন্য স্রেফ অপেক্ষাই বাড়ল। সেটাও বেশি দিনের জন্য নয়। আজ রাতে কাতালান ডার্বিতে এস্পানিওলের মাঠে জিতলেই নিজেদের ২৮তম লিগ জয় নিশ্চিত হবে বার্সার।
৩৫ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে ফ্লিকের বার্সেলোনা। ৩৬ ম্যাচে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বিদায়ী কোচ আনচেলত্তির রিয়াল। বার্সা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলকে হারাতে পারলে এবং এরপর রিয়াল নিজেদের বাকি দুই ম্যাচে জয় পেলেও লেভানডফস্কি–রাফিনিয়া–ইয়ামালদের দলকে ধরতে পারবে না। বার্নাব্যুর প্রায় ফাঁকা গ্যালারির সামনে ১১ মিনিটে রিয়ালের বক্সের ভেতর থেকে কোনাকুনি শটে গোল করেন ভালিয়েন্ত। ৬৮ মিনিটে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান এমবাপ্পে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই মৌসুমে ৫৪ ম্যাচে ৪০ গোল হয়ে গেল ফরাসি তারকার। স্পেনের পেশাদার ফুটবলে নিজের প্রথম মৌসুমে এমবাপ্পের আগে শুধু একজনই অন্তত ৪০ গোল করতে পেরেছেন। ১৯৯৬–৯৭ মৌসুমে বার্সার হয়ে ৪৭ গোল করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও। ম্যাচের যোগ করা সময়ের ৫ মিনিটে মায়োর্কা রক্ষণের ভুলের সুযোগ নেন লিগে এই প্রথম রিয়ালের একাদশের হয়ে নামা রামোন। বক্সের ভেতর বল ক্লিয়ার করতে পারেনি মায়োর্কার রক্ষণ। ভলিতে করা গোলে রিয়ালকে জিতিয়ে বার্সার সমর্থকদের হতাশ করেন রিয়ালের বয়সভিত্তিক প্রকল্প থেকে উঠে আসা রামোন। রিয়ালের হয়ে এটিই তাঁর প্রথম গোল।
গত এপ্রিলে মায়োর্কার বিপক্ষে ১–০ গোলের জয়ে ৪০টি শট নিয়েছিল বার্সা। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে রিয়াল কাল ৩৯টি শট নিয়েছে। ১১টি সেভ করেন মায়োর্কা গোলকিপার লিও রোমান। বার্সা ও রিয়ালের বিপক্ষে দুই ম্যাচে সব মিলিয়ে ৭৯টি শটের মুখোমুখি হলো মায়োর্কা। এর মধ্যে ২৬টি শট ছিল লক্ষ্যে, যেখান থেকে ২৩টি সেভ করেছেন রোমান। রিয়ালের বিপক্ষে ৪টি শট নিয়েছে মায়োর্কা। মোট ২৬টি কর্নার আদায় করে নেওয়ার বিপরীতে একটি কর্নারও হজম করেনি রিয়াল। চোটের কারণে ১২ জন খেলোয়াড়কে হারালেও শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নিতে পেরে খুশি আনচেলত্তি। জয়ের পর বিদায়ী কোচ বলেছেন, ‘১২ জন খেলোয়াড়ের চোটে পড়া একটু অদ্ভুতই। দল ও ব্যক্তিগত জায়গা থেকে ভালো খেলে আমরা এই ঘাটতি পূরণ করতে পেরেছি। দল খুব ভালো খেলেছে। জয়টা প্রাপ্য ছিল।’