প্রভাত স্পোর্টস: বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে হারতে হারতে কোনোরকমে বাঁচল আর্জেন্টিনা। শুরুতে গোল খাওয়ার পর একপর্যায়ে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আর্জেন্টিনা। দল পিছিয়ে থাকা অবস্থায় বদলি করা হয় লিওনেল মেসিকেও। কিন্তু এরপরও হাল না ছেড়ে ঠিকই হার এড়িয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। থিয়াগো আলমাদার গোলে প্রায় হারতে বসা ম্যাচটিতে ১-১ গোলে ড্র করেছে তারা। এর আগে ম্যাচের প্রথমার্ধে কলম্বিয়ার হয়ে গোল করেন লুইস দিয়াজ।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে কলম্বিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। তাই এই ম্যাচটা আর্জেন্টিনার জন্য ছিল প্রতিশোধের। আগের ম্যাচে বদলি হিসেবে নামা মেসি আজ বুধবার শুরু থেকেই ছিলেন একাদশে। কিন্তু মেসিকে নিয়েও কলম্বিয়ার বিপক্ষে সংগ্রাম করতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। লম্বা সময় পর্যন্ত পিছিয়েও ছিল তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত হারের হতাশায় মাঠ ছাড়তে হয়নি লিওনেল স্কালোনির দলকে।
বুয়েনেস এইরেসের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে মেসির দুর্দান্ত এক আক্রমণ দিয়ে শুরু হয়েছিল ম্যাচটা৷ তবে অল্প সময়ের মধ্যে আর্জেন্টিনার আক্রমণের জবাব দিতে শুরু করে কলম্বিয়া। বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও প্রতি-আক্রমণ থেকে সুযোগ তৈরি করে আর্জেন্টিনাকে বেশ চাপেই রেখেছিল তারা। এমনকি গোলের প্রচেষ্টায় আর্জেন্টিনার চেয়ে এগিয়েই ছিল তারা। তেমনই এক আক্রমণ থেকে ম্যাচের ২৪ মিনিটে কলম্বিয়াকে এগিয়ে দেন লুইস দিয়াজ। প্রতি-আক্রমণে সতীর্থ কেভিন কাস্তানোর কাছ থেকে মাঝমাঠের কাছাকাছি জায়গায় বল পান লিভারপুল তারকা। এরপর বাঁ প্রান্ত দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়ে ঢুকে পড়েন আর্জেন্টিনার বক্সে। বক্সের ভেতর তিন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারের ফাঁদ এগিয়ে জায়গা বের দুর্দান্ত এক শট নিয়ে করেন ম্যাচের প্রথম গোল।
ম্যাচের ৩০ মিনিটে অবশ্য আর্জেন্টিনা প্রায় সমতা ফিরিয়েই ফেলেছিল। কিন্তু বল জালে জড়ানোর পর রেফারি অফসাইডের পতাকা উড়ালে হতাশ হতে হয় আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। বিরতির আগে আরও একাধিকবার চেষ্টা করেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু কলম্বিয়ার সুদৃঢ় রক্ষণ-দেয়াল ভেঙে পাওয়া হয়নি কাঙ্ক্ষিত গোলটি।
বিরতির পর ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। একের পর এক আক্রমণে যায় তারা। কিন্তু কলম্বিয়ার ডিফেন্স দারুণভাবে আটকে রেখেছিল আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগকে। ৬৩ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন এনজো ফার্নান্দেজ। এরপর ৬৮ মিনিটে গোলের কাছাকাছি গিয়ে হতাশ হতে হয় স্বাগতিকদের। তবে আর্জেন্টিনার বিপদ বাড়ে ৭০ মিনিটে এনজো ফার্নান্দেজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে। কলম্বিয়ান মিডফিল্ডার কাস্তানোর মাথায় বুট দিয়ে আঘাত করেই মূলত এই কার্ড দেখেন চেলসি মিডফিল্ডার। ১০ জনের দলে পরিণত হয়েও অবশ্য আর্জেন্টিনা হাল ছাড়তে নারাজ ছিল। ৭৭ মিনিটে আর্জেন্টিনা পিছিয়ে থাকা অবস্থাতেই মেসিকে তুলে নেন স্কালোনি। তাঁর বদলে মাঠ নামেন এজেকিয়েল পালাসিওস।
মেসি নেই, তার ওপর একজন খেলোয়াড় কম; এমন পরিস্থিতিতে আর্জেন্টিনার ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে যখন শঙ্কা তৈরি হচ্ছিল, তখনই চমক দেখান আলমাদা। ৮১ মিনিটে দারুণ এক শটে গোল করে সমতায় ফেরান আর্জেন্টিনাকে। লিড হারিয়েও শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যায় কলম্বিয়া। ৮৬ মিনিটে সুযোগও পেয়েছিল তারা। কিন্তু পোস্টের বাধায় গোলটি আর পাওয়া হয়নি। এরপর আর কোনো গোল না হলে ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকে।