• মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
মোরেলগঞ্জে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা অনুমোদন সভা অনুষ্ঠিত রিকশা চালিয়ে বিদায়ী শুভেচ্ছা জার্মান রাষ্ট্রদূতের বেশিরভাগ জমি এখনও টেকসই চাষের বাইরে : বিবিএস নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন : মির্জা ফখরুল অপরাধের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যায় যেতে হবে না: এনবিআর চেয়ারম্যানের আটক হওয়া বাংলাদেশিরা আইএসের সঙ্গে যুক্ত: মালয়েশীয় পুলিশ মহাপরিদর্শক ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কখনোই বন্ধ হবে না : ইরাভানি নাজিরপুর উপজেলা যুবদলের আনন্দ মিছিল ও র‍্যালি

টোটালগ্যাজ বাংলাদেশ অধিগ্রহণ করছে ওমেরা পেট্রোলিয়াম

প্রভাত রিপোর্ট / ২০ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

প্রভাত অর্থনীতি: বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান- ওমেরা পেট্রোলিয়াম, ফরাসি কোম্পানি টোটালগাজের বাংলাদেশের ব্যবসা অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে। ৩২ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩৯০ কোটি টাকা) এই চুক্তি চূড়ান্ত হলে দেশের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বাজারে ওমেরার অবস্থান আরও দৃঢ় হবে। বর্তমানে ওমেরার বাজার হিস্যা ২২ শতাংশ, যেখানে টোটালগাজের হিস্যা প্রায় ৫ শতাংশ। দুই কোম্পানির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় ১৯ মিলিয়ন ডলার ইক্যুইটিতে ব্যবহৃত হবে, বাকি ১৩ মিলিয়ন ডলার যাবে দায়-দেনা ও সম্পদ অধিগ্রহণে, যার মধ্যে ব্যাংক ঋণও রয়েছে।
এ চুক্তির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরে জটিল আলোচনা চলে। টোটালগ্যাজ বাংলাদেশের ১১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে স্থানীয় শেয়ারহোল্ডারদের হাতে, আলোচনার অন্যতম বাধা ছিল এই অংশীদারদের অনিচ্ছা। তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লোকসান মুখে পড়া টোটালগ্যাজ অবশেষে বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। “উভয়পক্ষ ইতোমধ্যে সব আইনি নথি বিনিময় করেছে। খুব শিগগিরই আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করব,বলেন ওমেরা পেট্রোলিয়ামের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
ওমেরা পেট্রোলিয়ামের মালিক ওমেরা এলপিজি, একটি যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানি। এর ৬২ শতাংশ অংশীদারত্ব এমজেএল বাংলাদেশের, আর ২৫ শতাংশ অংশীদারত্ব হচ্ছে বিবি এনার্জি (এশিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাকি ১৩ শতাংশের অংশীদার নেদারল্যান্ডসভিত্তিক উন্নয়ন ব্যাংক- এফএমও।
২০০২ সালে টোটালগ্যাজ বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের শীর্ষ তিনটি এলপিজি আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্থান করে নেয়। তবে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর আক্রমণাত্মক বিনিয়োগ এবং সম্পূর্ণ আমদানি-নির্ভর বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেনি তারা। বাংলাদেশে টোটালগ্যাজের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে এলপিজি আমদানি, সংরক্ষণ, বোতলজাতকরণ এবং ১২ কেজি, ১৫ কেজি ও ৩৩ কেজি সিলিন্ডারে বাজারজাতকরণ। শিল্প খাতের জন্য তারা বাল্ক বা পাইকারি সরবরাহও করে থাকে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তাদের ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার টার্মিনাল এবং বগুড়ায় একটি সেকেন্ডারি স্থাপনাও রয়েছে।
২০১০ সালে যেখানে দেশের এলপিজি চাহিদা ছিল মাত্র ৭০ হাজার টন, সেখানে এখন বার্ষিক চাহিদা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ লাখ টনে। প্রতি বছর এই খাত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে চাহিদা ৩০ লাখ টনে পৌঁছানোর পূর্বাভাস রয়েছে।
প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ কমে আসার আশঙ্কায় সরকার ২০০০ এর দশকের শুরুতে—নতুন গ্যাস সংযোগে বিধিনিষেধ আরোপ করে, এবং এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেয়। ২০০৯ সাল থেকে এপর্যন্ত ৫৮টি এলপিজি ব্যবসার লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে।
বাজারে এখন বসুন্ধরা গ্রুপ, যমুনা স্পেসটেক, বেক্সিমকো, মেঘনা, সিটি গ্রুপের মতো শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর আধিপত্য রয়েছে। তবে ক্রমবর্ধমান পরিচালন ব্যয় এবং প্রচণ্ড মূল্য প্রতিযোগিতার কারণে— বিশেষ করে ফ্রি সিলিন্ডার অফারসহ নানা প্রণোদনার কারণে — কিছু কোম্পানি আর্থিকভাবে চাপে পড়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে এলপিজি ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও