প্রভাত বিনোদন : গতকাল সন্ধ্যায় সংগীতশিল্পী কনার সংসার ভাঙছে, এমন খবর প্রকাশ করে একটি গণমাধ্যম। আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে কনার সঙ্গে তাঁর স্বামী গোলাম মো. ইফতেখারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, এমন খবরও প্রকাশও হয় গণমাধ্যমে।
এর কয়েক ঘণ্টা পর গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদের খবর জানান কনা। দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, ১৬ জুন তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে ফেসবুকে পোস্ট দেন ইফতেখার। নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ইফতেখার লিখেছিলেন, ‘কনাকে নিয়ে যা লিখছেন, তার নিতান্তই কিছু কুচক্রী ও কুরুচিপূর্ণ মানুষের বানানো। আমাদের কিছু পারিবারিক সমস্যা চলছে, যা আমরা দুজনই সমাধান করার চেষ্টা করছি। আমাদের কোনো বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। আল্লাহ মাফ করুন যদি আলাদা হতে হয়, তার কারণ আমাদের বহুদিন ধরে চলে আসা পারিবারিক দ্বন্দ্ব হতে। কোনো পরকীয়া বা এই ধরনের যত্ত সব নোংরা, মিথ্যা, বানোয়াট কোনো সংবাদ প্রকাশ করেন, তাহলে আমি সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থান নিতে বাধ্য থাকব।’
কনার বিচ্ছেদের পোস্ট দেওয়ার পরপরই সেটা অস্বীকার করে দেওয়া ইফতেখারের এই পোস্ট কৌতূহল তৈরি করে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজের পোস্ট সরিয়ে দেন ইফতেখার। বিচ্ছেদ নিয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালের এপ্রিলে কনা ও ইফতেখার বিয়ে করেন। বিয়ের আগে সাত বছর প্রেম করেন কনা ও ইফতেখার। দুজনের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনাকল্পনা চললেও দুজনের কেউই মুখ ফুটে কিছু বলেননি।
২০১৯ সালে চুপিসারে বিয়ে করেছিলেন কনারা। দাম্পত্যের ৭ বছর হওয়ার আগেই চুপিসারে ভেঙে গেলো ভালোবেসে বাঁধা সংসার। বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করে বুধবার (২৫ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন কনা। সেখানে তিনি লেখেন, ‘জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে, সবই আল্লাহর ইচ্ছা। ঠিক তেমনি যে কোনো বিচ্ছেদও হয় তারই ইশারায়। আমি এবং গহিন দীর্ঘ ছয় বছরের সংসার জীবনের পর আমাদের পথ আলাদা করার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি একান্তভাবেই আমাদের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ফল।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা একে অপরের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল থাকবো। জীবনের নতুন অধ্যায়ে যেন শান্তি ও সম্মানের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারি এটাই প্রত্যাশা।’ দাম্পত্যের জটিলতা পেরিয়ে গানে মনোযোগী হতে চান দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি আমার গানের কাজেই মনোনিবেশ করতে চাই, যেটি আমাকে এই পর্যন্ত এনেছে। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ।’ দিলশাদ নাহার কনা ও গহিনের বিয়ে হয়েছিল ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল। অনেকটা ঘরোয়া পরিবেশে অনুষ্ঠিত সেই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন পরিবারের সদস্য ও কাছের কিছু মানুষ।
ন্যান্সি বললেন শেয়াল রানির বাণী: বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা। বুধবার রাত ১১টার দিকে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ ঘোষণা দেন তিনি। এরপর রাত ১২টার দিকে আরেক সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সিও ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেই পোস্ট নিয়ে চলছে আলোচনা। অনেকেই মনে করছেন, তিনি কনাকে ইঙ্গিত করেই পোস্টটি দিয়েছেন। কারণ, তার পোস্টে কনার দেওয়া পোস্টের একটা লাইন ব্যবহার করা হয়েছে। ন্যান্সি লিখেছেন, ‘জন্ম মৃত্যু বিয়ে বিচ্ছেদ; এর সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়- বাণীতে শেয়াল রানি।’ এদিকে ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টের শুরুতে কনা লিখেছেন, ‘আমি আপনাদের ভালোবাসার কনা। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে- সবই আল্লাহর ইচ্ছা।’ এরপর তিনি তার বিচ্ছেদের বিস্তারিত জানান।
ন্যান্সির পোস্ট দেখে নেটিজেনরা ধরেই নিয়েছেন, কনাকেই শিয়াল রানি বলেছেন গায়িকা। এর আগে গত বছরের ১৪ জুলাই ফেসবুকে একটি শেয়ালের ছবি দিয়ে কনাকে ইশারা করেই আরেকটি পোস্ট দিয়েছিলেন ন্যান্সি৷ সেসময় ‘তুফান’ সিনেমায় কনার গাওয়া ‘দুষ্টু কোকিল’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায় দুই বাংলায়। ২০০০ সাল থেকে নিয়মিত গান করে যাচ্ছেন কনা। ২০০৫ সালে গানের ভুবনে পা রাখেন ন্যান্সি। দুজনই জনপ্রিয়তার আকাশ ছুঁয়েছেন। বহু হিট-সুপারহিট গান উপহার দিয়ে কোটি ভক্তের মনে জায়গা করেছেন। তবে দুজনের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব চলমান বলে চাউর আছে গানপাড়ায়। তবে কখনোই সেসব নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি তারা। কনার সঙ্গে বিরোধ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি ন্যান্সি। আর কনাও ন্যান্সির ফেসবুক স্ট্যাটাসের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি কখনো।