• সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১১:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
মোরেলগঞ্জে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা অনুমোদন সভা অনুষ্ঠিত রিকশা চালিয়ে বিদায়ী শুভেচ্ছা জার্মান রাষ্ট্রদূতের বেশিরভাগ জমি এখনও টেকসই চাষের বাইরে : বিবিএস নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন : মির্জা ফখরুল অপরাধের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যায় যেতে হবে না: এনবিআর চেয়ারম্যানের আটক হওয়া বাংলাদেশিরা আইএসের সঙ্গে যুক্ত: মালয়েশীয় পুলিশ মহাপরিদর্শক ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কখনোই বন্ধ হবে না : ইরাভানি নাজিরপুর উপজেলা যুবদলের আনন্দ মিছিল ও র‍্যালি

দেশ শান্তিতে রাখতে মামলাটা উঠাতে চান মুরাদনগরের পাশবিক নির্যাতনের শিকার সেই নারী

প্রভাত রিপোর্ট / ৫ বার
আপডেট : সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

মো. বিল্লাল মোল্লা, কুমিল্লা উত্তর: ‘হের (ফজর আলী) তো অবস্থা খারাপ। বাঁচে না মরে বলা যায় না। সে যদি এলাকায় হাঁটা-চলা করতো তাহলে মামলা করে কাজ হতো। এখন ওর মরার অবস্থা। আমরা মামলাটা উঠাতে চাই, দেশে শান্ততে রাখতে চাই। হিন্দু-মুসলমান শান্তিতে থাকুক।’
রবিবার (২৯ জুন) নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কুমিল্লার মুরাদনগরের পাশবিক নির্যাতনের শিকার ওই নারী।
তিনি আরও বলেন, আমার মানসম্মান সব গেছে, সবাই মুক্তি পাক। আমি দুটি শিশুসন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই। আমি দশজনের শান্তি চাই, দেশের শান্তি চাই। আমার যা হওয়ার তো হয়েই গেছে। আমি মামলা তুলে নেব।
ওই নারী বলেন, আমি মামলা করেছি, আমি তুলে ফেলবো। আমি দশজনের ভালো চাই। মামলা তুলে নিতে আমাকে কেউ চাপ দেয়নি। টাকার লোভও দেখায়নি। আমার স্বামী বলেছে- ‘তোর সম্মান যা যাওয়ার গেছে। এখন কেস করলেও সেই সম্মান ফিরে পাবি না।’
ফজর আলীর সাথে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার মা ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছে ফজর আলীর কাছে। সেই পাওনা টাকার বিষয়ে ফজর আলী আমাকে মাঝেমধ্যে ফোন দিতেন। এসব বিষয় ফজর আলীর ছোটভাই আমাদের সন্দেহ করে। একদিন ফজর আলীর ভাই আমাদের ঘরে এসে আমার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে আছাড় মেরে মোবাইল ভেঙে ফেলে। পরে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিচার হয়ে ওই ঝামেলা মীমাংসা হয়।
সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ফজর আলী আমাদের ঘরের সামনে এসে দরজা খুলতে বলেন। আমি বলেছি আমার বাবা-মা পাশের বাড়ির সাপ্তাহিক পূজার অনুষ্ঠানে গেছে। আমি আর দুই সন্তান ঘরে। এ সময় তিনি কৌশলে দরজা খুলে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে আমার ওপর অত্যাচার করেন। কিছুক্ষণ পর ৭-৮ জন এসে ফজর আলীকে মারধর করেন। তাকে (ফজর আলীকে) মারধরের পর আমাকেও মারধর শুরু করেন। তারা আমার ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে নিপীড়নের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। পরে বিষয়টি নজরে আসে সবার। বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার ফজর আলী নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন ওই নারী। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফজরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফজর ছাড়া অন্য চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ– তারা ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছেন। এ অভিযোগে রোববার কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ আসামি করা হয়েছে।
ভাইরালকাণ্ডে জড়িত গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- একই এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে মো. আলী সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মো. আলমের ছেলে আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে অনিক।
ফজর আলী কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভিডিও ছড়ানোর দায়ে গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, পুরো বিষয়টি এখন তদন্তানাধীন। ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, শেষ হলে বিস্তারিত জানাতে পারবো। ফজর আলীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকের ছাড়পত্র পেলে তাকে আদালতে তোলা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও