বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে শেখ হাসিনা

বিদেশি শক্তির হাতে ব্যবহৃত না হওয়ার আহবান

প্রকাশিত - ১১ আগস্ট, ২০২৪   ০৯:২৬ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান নেয়ার ৬ দিন পর নীরবতা ভাঙলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন তিনি। সেই সাথে কোনো বিদেশি শক্তির হাতে ব্যবহৃত না হওয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক করেন তিনি। গণবিক্ষোভে সহিংসতায় কয়েকশ মানুষের প্রাণহানির ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পেছনে বিদেশি হস্তক্ষেপ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ভারত সরকারের ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় এই অভিযোগ তুললেন শেখ হাসিনা। শনিবার দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেয়া বার্তায় তিনি এসব অভিযোগ করেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। শেখ হাসিনার বার্তা উদ্ধৃত করে দ্য প্রিন্ট প্রতিবেদনে বলা হয়, আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সেন্টমার্টিন ও বঙ্গোপসাগর ছেড়ে দিতাম, তাহলে আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের টানাপড়েন চলছিল বেশ অনেক দিন ধরেই। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন, বিমানঘাঁটি করতে দেয়ার বিনিময়ে তাঁকে সহজে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রলোভন দিয়েছিলেন এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি।

কোনো বিদেশি শক্তির দ্বারা ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, লাশের মিছিল যাতে দেখতে না হয়, সে জন্য আমি পদত্যাগ করেছি। তাঁরা আপনাদের (শিক্ষার্থীদের) লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আমি তা হতে দিইনি। তিনি আরও বলেন, তিনি দেশে থাকলে হয়তো আরও প্রাণহানি হতো। আরও অনেক সম্পদহানি হতো। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেয়া বার্তায় িেতনি দেশে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি শিগগির ফিরব, ইনশা আল্লাহ। পরাজয় আমার, কিন্তু জয়ী হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আপনাদের সমর্থন নিয়ে আমি এসেছিলাম, আপনারা ছিলেন আমার শক্তি। আপনারা যখন আমাকে চাননি, তখন আমি নিজে থেকে সরে গেছি, পদত্যাগ করেছি। আমার যেসব কর্মী সেখানে আছেন, তাঁরা কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বারবারই উঠে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে যাওয়ার পর একাধিকবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে দেখা হয়েছে শেখ হাসিনার। ভারতীয় নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক কর্তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁর। তবে রবিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য তিনি আমেরিকাকে সরাসরি দায়ী করেছেন। দেশত্যাগ করার আগে যে বক্তব্য তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে দিতে চেয়েছিলেন, তাতেও এর উল্লেখ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, আমেরিকার কথামতো বঙ্গোপসাগরে একক আধিপত্যর জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তাঁদের ছেড়ে না দেয়ার মাশুল হিসেবে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশিদের সতর্ক করেছেন, তাঁদের ওপর মৌলবাদীরা যেন ভর না করে। তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন, তিনি আবার নিজের দেশে ফিরে যাবেন। তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আবারও দাঁড়াবে। তাঁর দলের বহু নেতাকে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার খবরে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত।

অন্যদিকে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, হাসিনা ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগের শীর্ষ কর্তাদের বক্তব্য, গত মে মাসে আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহসচিব ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরের সঙ্গে এই ক্ষমতা পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে। এই অভিযোগও তাঁরা করছেন যে, লু চিনবিরোধী কিছু পদক্ষেপ নিতে তার ওপর চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি বর্তমানে ভারতের হিন্দন বিমানঘাঁটির কাছাকাছি একটি গোপন আস্তানায় অবস্থান করছেন। যতক্ষণ না তাঁর পরবর্তী আশ্রয়ের ঠিকানা নির্ধারিত হয়, হাসিনা নয়াদিল্লিতেই থাকবেন। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভারতে থাকতে হতে পারে। তবে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আইনি সুযোগ না থাকায় ভিসার মাধ্যমে তিনি দিল্লিতে থাকবেন।

 সূত্র দ্য প্রিন্ট

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন
তারেক রহমান
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী মারা