প্রভাত রিপোর্ট : আলোচিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে শুধু গ্রেপ্তার নয়, বিচার-তদন্ত ছাড়া শত শত গুম-খুনে তার মতো জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার ও কমিশন গঠন করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময় গুম হওয়াদের সন্ধান ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আমরা তাকে (জিয়াউল আহসান) গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছিলাম। গত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে শুধু গ্রেপ্তার করলেই হবে না, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতসহ প্রত্যেকটা গুম-খুনের গ্রহণযোগ্য তদন্ত করতে হবে।
বিতর্কিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান অসংখ্য লোকের ফোনে আড়িপাতা ও গুম-খুনে অভিযুক্ত। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরদিন ৬ আগস্ট তাকে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা দোকান কর্মচারী হত্যা মামলায় (৮ নম্বর মামলা) গত বৃহস্পতিবার রাতে তাকে খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার তথ্য ডিএমপি থেকে নিশ্চিত করার পর এক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন সানজিদা ইসলাম।
মায়ের ডাক এমন সব পরিবারের একটি প্ল্যাটফর্ম, যারা বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সরকারি সংস্থা কর্তৃক বলপূর্বক গুমের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রিয়জনের ভাগ্যের পরিণতি জানার জন্য এ প্ল্যাটফর্ম চালু করেন। তাদের স্বজনদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর তারা নিখোঁজ বা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। মায়ের ডাকের সমন্বয়ক বলেন, গুমে জড়িত জিয়াউল আহসানসহ জড়িত সবার বিরুদ্ধে শিগগিরই মামলা করা হবে। তিনি বলেন, আমরা অনেকবার গুম হওয়াদের সন্ধানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছি। দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীনের পর গত কয়েকদিনে মাত্র তিনজন গুম হওয়া মানুষ বের হয়ে এসেছেন। কিন্তু আমরা বাকি ভাইদের ফেরত পাইনি। আমরা জানতে চাই আমাদের ভাইদের কি হয়েছে।
সানজিদা বলেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের যারা উপদেষ্টা রয়েছেন তাদের কাছে দাবি, জিয়াউল আহসানের মতো যারা গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হোক। যারা আয়নাঘরের মতো বিভিন্ন জায়গায় এখনও বন্দি রয়েছেন তাদের মুক্ত করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। প্রত্যেকটা গুমের ঘটনাকে আলাদা করে বিচার করা হোক।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি, জাতিসংঘের অধীনে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে মানবতাবিরোধী, বিচারহীনভাবে গুম-খুনে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হোক। এটা নিশ্চিত করা হোক, আর নতুন করে কেউ যেন গুম খুনের শিকার না হন। এমন দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা হোক, যাতে নতুন করে কেউ যেন জিয়াউল আহসান হওয়ার সাহস না পায়।