প্রভাত সংবাদদাতা, ফেনী : শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় ফেনী জেলাজুড়ে প্রায় ৬৭ হাজার ২৮৭ হাজার কাঁচাপাকা ঘর, আসবাবপত্র ও বৈদ্যুতিকসামগ্রী পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বানভাসি মানুষের আনুমানিক ৬৯২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বসতবাড়িতে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ঘর মেরামতে ব্যয়, আসবাবপত্রের ক্ষতি ও নিত্য ব্যবহার্য বৈদ্যুতিকসামগ্রী মেরামতের ব্যয় ভুক্তভোগী প্রতি ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবির ভিত্তিতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঘরবাড়ি, জেলায় বন্যায় আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক সামগ্রীর সর্বোচ্চ ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে ফুলগাজীতে। সবচেয়ে কম ক্ষয়ক্ষতি লক্ষ্য করা গেছে দাগনভূঞা এবং সোনাগাজীতে। এ দুই উপজেলায় প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩০ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। এছাড়া ফেনী সদরের কালীদহ ইউনিয়ন, মোটবী ইউনিয়ন এবং ধর্মপুরে সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে। এ তিনটি ইউনিয়নে ১ হাজার ৬০০ পরিবারের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। সদর উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা।
ফেনী পৌর এলাকার মাস্টারপাড়া, সদেবপুর, মৌলভীবাজার, একাডেমি, রামপুরসহ একাধিক আবাসিক এলাকায় এক হাজারের বেশি পানির মোটর বন্যার পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে বলে মেরামতকারীদের সূত্রে জানা গেছে। শহরে বাড়িঘরে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৪০ কোটি টাকা হতে পারে বলে তথ্যে উঠে এসেছে।
ভয়াবহ বন্যায় জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অন্তত ২০ হাজার ৫০০টি বসতঘর পানিতে তলিয়ে যায়। এতে আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০৫ কোটি টাকা বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। ক্ষতিগ্রস্ত বসতির মধ্যে দালানঘর, সেমিপাকা, টিনশেড ও মাটির ঘর রয়েছে।বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া বসতঘরের অন্তত ৯০ শতাংশের আসবাবপত্র বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বন্যার পানিতে পাঠাননগর ইউনিয়নে অন্তত ৫ হাজার, রাধানগর ইউনিয়নে ৫ হাজার, শুভপুর ইউনিয়নে ৩ হাজার, ঘোপাল ইউনিয়নে ৩ হাজার, পৌর এলাকায় ২ হাজার ৫০০ এবং মহামায়া ইউনিয়নে ২ হাজার বসতঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।