বিশেষ প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আহবান করা আন্তর্জাতিক দরপত্র মূল্যায়ন দ্রুত শেষ করে ব্লক বরাদ্দ দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের প্রথম ভাগে বিদেশি কোম্পানিগুলো বঙ্গোপসাগরে ড্রিলিংয়ের জন্য মেশিনারি স্থাপনের কাজ শুরু করবে বলে পেট্রোবাংলা সূত্রে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্র, স্থলভাগসহ মোট ২২টি ব্লকের মধ্যে ১৭টি ব্লকের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ১৪টি কোম্পানি দরপত্রে অংশ নিয়েছে। এরমধ্যে ৮টি কোম্পানিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্টেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্যের এবং যৌথ মালিকানাধীন পশ্চিমা কোম্পানি। ভারত, জাপান, চীনের সরকারি ও বেসরকারি ৪টি কোম্পানিও রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো গভীর সমুদ্রের ব্লকের ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের অতিমাত্রিক আগ্রহে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিশেষকরে ধারণা করছেন যে, নিশ্চিত, বিশ^াসযোগ্য তথ্য, উপাত্তের ভিত্তিতেই বিদেশিরা আগ্রহী হয়েছে।
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তারা পযাপ্ত তথ্য পেয়েছে। ভারতীয় জরিপ ও বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্য বাস্তবভিত্তিক জরিপ ফলাফলের ভিত্তিতেও তারা আস্থাশীল হয়েই ব্লক পেতে নানামুখী জোরালো তৎপরতা চালাচ্ছে। বিগত নির্বাচনের ব্যাপরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো প্রবল বিরোধী অবস্থান নিয়েছিল। বিরোধী দল বিএনপির শক্তির প্রধান উৎসই ছিল তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সেই পশ্চিমা দেশগুলোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের প্রধান মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে দৃশ্যমান সম্পর্ক থাকলেও বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও বজায়ে রাখা, কোনরকম উশৃঙ্খল, নৈরাজ্যকর কর্মকা- বরদাশত না করার কঠোর সতর্কবার্তার কথা জানিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ একটাই বঙ্গোপসাগরসহ বাংদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশিদের বিনিয়োগ নিশ্চিত করা।
বঙ্গোপসাগরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিদেশি কোম্পানিগুলো বিপুল বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। তাদের প্রাথমিক পর্যায়ের বিনিয়োগের পরিমাণই ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চীন, ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, মিসর, সুদান, ঘানা, ঘানা, আলজেরিয়া. তিউনিসিয়া, রুয়ান্ডা, লিবিয়া, কঙ্গো, নাইজেরিয়া, ইরিত্রি, গাম্বিয়া, মরক্কো, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা, চিলি, পেরু, ইকুয়েডর, কোরিয়া, ইতালি, জার্মানি, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করবে। সুনির্দিষ্ট প্রকল্প প্রস্তাবও দিয়েছে। নির্ধারিত ইপিজেডসমূহ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বিদেশিদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে সরকার মেশিনারি যন্ত্রাংশ, শিল্পের কাঁচামালের উপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বিনিয়োগ সবরকম ট্যাক্স, ফিমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।তাপর্যপূর্ণ হচ্ছে যে, বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীদের এখানে নাগরিকত্বও দেয়া হবে। বিশে^র ৪৪টি দেশের নাগরিকরা বাংলাদেশে নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ পাচ্ছেন। তারা এখানে আজীবন অবস্থান, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা, ভোগদখল, বিক্রি, বিনিয়োজিত অর্থ নিজ দেশে বা তৃতীয় কোন দেশে হস্তান্তর করতে পারবেন। জানা যায়, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিপুল বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। শিল্প-কারখানা নির্মাণ কাজ ব্যাপকভাবে শুরু হবে।
প্রভাত/টুর