স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোংলার জয়মনি ও কাটাখালী এলাকায় রাতের আঁধারে কয়েকটি চিংড়ি ঘের ড্রেজিংয়ের বালু ফেলে ভরাটের অভিযোগ উঠেছে একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এই বালু ভরাটের ফলে ওই চিংড়ি ঘেরগুলোর কয়েক লাখ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি চাষীরা বৃহস্পতিবার (২৫সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ছুটে এসে বালু ভরাট বন্ধ করতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মোংলা থানায়ও চিংড়ি চাষী শ্যামল অধিকারী, বিপুল মন্ডল, বিধান মন্ডল, আঃ জববার বেপারী, আবুল কালাম হাওলাদার, আবুল তালুকদার, লালমন বিবি ও আব্দুল মান্নান তালুকদার অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
লিখিত অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, উপজেলার জয়মনিরঘোল ও কাটাখালী এলাকায় বিএস খতিয়ান-৩০, ৩৫, ৪১, ১১০, ১১৬, ১৪৮, ১৬২, ২০১, ৩২১, ৩০৮:৫৭,৪০ ২,৪২৪, ৪২৫,৪৫৬ ও ৫১৭,৫১৯ দাগের চিংড়ি চাষ করা জমিতে এ,জেড নামের একটি ড্রেজিং কোম্পানি রাতের আঁধারে নদীর বালু ফেলে ভরাট করে ফেলে। এতে তাদের কয়েক লাখ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। তবে বালু ফেলতে বাঁধা দিলে তাদের কথা শোনেনি কোম্পানিটি। তাই এখন জমিতে বালু ফেলা বন্ধ করাসহ ভরাটকৃত জমির ক্ষতিপূরণ পেতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
তবে ড্রেজার কোম্পানি এ,জেড ড্রেজিং কোম্পানির স্থানীয় প্রতিনিধি আফসার উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে জানতে হলে আমাদের অফিসে যোগাযোগ করেন।

ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিধান মন্ডল বলেন, কোন কিছু না জানিয়ে রাতের আঁধারে এ,জেড ড্রেজিং কোম্পানি তাদের মাছের ঘের কেটে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলে ভরাট করে ফেলে। এতে তার তিন লাখ টাকার মাছ মরে ক্ষতি হয়েছে। একটি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে মাছ চাষ করছিলেন তিনি। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম ‘!আবুল কালাম হাওলাদার বলেন, ‘রাতের আঁধারে তার জমিতে বালু ফেলে মাছের ঘের ভরাট করে দিয়েছে এ,জেড কোম্পানি। এ সময় তাদের লোকজনকে বাঁধা দিলে তারা কথা শোনেনি। ড্রেজিংয়ের কোম্পানি কোন অধিকারে অন্যের জমিতে বালু ফেলে এমন ক্ষতি করল?আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, আমার পৈতৃক সম্পত্তিতে দীর্ঘদিন কয়েক বছর ধরে চিংড়ি চাষ করে জীবিকা চালাচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ গত রাতে এ,জেড ড্রেজিং নামের একটি কোম্পানি তাদের কিছু না জানিয়ে মাছের ঘেরে বালু ফেলে ভরাট করে দিয়েছে। এ,জেড ড্রেজিং কোম্পানির বিচার এবং তাদের ক্ষতিপূরণ চান তারা।
নাম প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন  জানান, এসব জমি ভরাট করা হচ্ছে, বিক্রির বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য রয়েছে তাদের। উপজেলার বিভিন্ন স্থান জুড়ে যেভাবে ভরাট হচ্ছে কৃষি জমি এভাবে চলতে থাকলে আর ফসল করা সম্ভব হবে না।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার সুমীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেনি।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির না ঘটে সেজন্য ঘটনাস্থলে পুলিশের নজরদারী রয়েছে।