প্রভাত রিপোর্টার : গানের বিদ্যাপীঠ ছায়ানট মিলনায়তনে স্টেট মাল্টিমিডিয়া আয়োজন করেছে এককরবীন্দ্র সংগীতের পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশনা করবেন শান্তিনিকেতনের প্রতিভাবান শিল্পী মধুবন্তী চক্রবর্তী। ৩১ মে ২০২৪; শুক্রবার; সন্ধ্যায়— সুরের মূর্ছনায় সিক্ত হবেন শ্রোতারা; এমন প্রত্যাশাই আয়োজকদের।
আয়োজনে অনন্ত আনন্দধারা শিরোনামে মধুবন্তী চক্রবর্তীর কমবেশি ১২টি একক রবীন্দ্র সঙ্গীতের পরিবেশনা থাকছে। আয়োজক স্টেট মাল্টিমিডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিফাত মোহাম্মদ রাফসানজানি জানিয়েছেন; এই আয়োজনে— তাই তোমার আনন্দ আমার পর, আছি তোমারই মাটির কন্যা, বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দধারা, মেঘ বলেছে যাব যাব, আমারে তুমি অশেষ করেছ, জগতে আনন্দযজ্ঞেসহ রবীঠাকুরের বেশ কয়েকটি শ্রোতাপ্রিয় গান পরিবেশিত হবে।
মধুবন্তী চক্রবর্তী যদিও বাংলাদেশের এই প্রথম আয়োজনে গাইছেন। এর আগে আকাশবাণীতে নিয়মিত রবীন্দ্রসঙ্গীত, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেনের গান গেয়েছেন ২০১৫ সাল পর্যন্ত। অবশ্য ২০২২ সালে ঢাকায় ‘মানবকন্যা’ নামে তার প্রথম সিডি প্রকাশিত হয়। ভারতের দিল্লি, মুম্বাই ও কলকাতায় বেশ কিছু অনুষ্ঠানে গান করেছেন।
মধুবন্তী চক্রবর্তীর সরল স্বীকারেক্তি— পড়াশুনার ক্ষেত্রেও গান আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। আমার পছন্দের সংগীত জগৎ সুবিস্তৃত। শাস্ত্রীয় সংগীতেরও ভীষণ ভক্ত আমি। মন-প্রাণভরে অবসরে ধ্রুপদী গান শুনতে ভালো লাগে। আমি অনেক গানের কথাই বলতে পারি, যেগুলো প্রতিদিন শুনলেও পুরোনো হয়ে যায় না। গান আমার জীবনের অংশ হয়ে গেছে সেই শিশুকাল থেকেই।
মৃদভাষী মধুবন্তী চক্রবর্তী জানিয়েছেন— শুরু থেকেই সংগীতের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল। বাবা বরেণ্য আবৃত্তি শিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ মায়ের একমাত্র কন্যা মধুবন্তী চক্রবর্তী। মধুবন্তী নাম রাখা হয় দক্ষিণ ভারতীয় রাগিনীর নাম অনুসারে। ১৯৯১-৯২ সালে শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন দ্বিতীয় শ্রেণীতে। জন্ম পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায়। দিদিমা বাজাতেন সেতার। মায়ের দিদিমা ছিলেন ধ্রুপদ সঙ্গীতশিল্পী। মামা বাড়িতে সংগীতের পরিবেশে গান গাওয়া শুরু। মধুবন্তী চক্রবর্তী জানালেন— ১৯৯৫ সালে ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধিপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর কালচার রিসোর্সেস এন্ড ট্রেনিং [সিসিআরটি] থেকে রবীন্দ্রসংগীতে বৃত্তি পাই। গান শেখা শুরু গুরু স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের কাছে, যা চলছে টানা ২০১২ সাল পর্যন্ত। এছাড়া শাস্ত্রীয় সংগীত শিখেছি বিদুষী মীরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ে কন্যা ইন্দ্রানী মজুমদারে কাছে।
মধুবন্তীর প্রতিভা বিকশিত হতে খুব সময় লাগেনি। কলকাতা জহর শিশু ভবন আয়োজিত রবীন্দ্রসংগীত প্রতিভার অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন ২০০৭ সালে। একই বছর জুনিয়র আর্টিস্ট স্কলারশিপ অর্জন করা মধুবন্তী বিশ্বভারতীতে ২০০৬ সালে স্নাতকে প্রথম বিভাগে প্রথম হয়েছেন। ২০০৮ সালে স্নাতকোত্তরেও প্রথম বিভাগে প্রথম। ২০১০ সালে বিশ্বভারতী থেকে বিএড পাস করেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল করছেন।
প্রভাত/এএইচ